ব্যবসায়ীরা বিপাকে: রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার!

টেকনাফ বন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে ধস!

গিয়াস উদ্দিন ভুলু, কক্সবাজার জার্নাল :

দীর্ঘ কয়েক দিন ধরে সীমান্তের ওপারে পার্শ্বভর্তী দেশ মিয়ানমারে চলমান সংঘাত চলছে। যা এখনো অব্যাহত। উক্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়কারী টেকনাফ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানীতে বড় ধরনের ধস পড়েছে। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করা বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,বন্দরের জেটি ফাঁকা পড়ে আছে। আগের মত মাল বোঝাই জাহাজ বন্দরে নেই বললে চলে। কার্যক্রম কমে যাওয়ায় বন্দরে কর্মরত শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন।

অনুসন্ধানে আরো জানাযায়,টেকনাফ স্থলবন্দর থেকে ব্যবসায়ীরা আমদানি-রপ্তাণী করে গড়ে প্রতিমাসে সরকারকে ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে সক্ষম হয়।

কিন্তু গত বিদায়ী বছরের ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর মিয়ানমারে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে, ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তাণী ধিরে ধিরে নিম্ম মাত্রার নেমে আসে। সেই সুত্রে গত বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত গড়ে ৩৫০ কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে সরকার।

গত তিন মাস আগে টেকনাফ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে, সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান আর্মির তুমুল সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানীতে নেমে আসে ধস। বন্দরের জাহাজ ঘাঁট গুলোতে বিরাজ করছে শুণ্যতা। দিন দিন কমতে শুরু করেছে রাজস্বের উর্দ্ধগতি

এবিষয়ে বন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অভিমত প্রকাশ করে বলেন,মিয়ানমারে সৃষ্ট হওয়া সংঘাতের কারনে গত ১৪ নভেম্বর থেকে উক্ত রাজ্য থেকে টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আসা একে বারেই কমে গেছে। ঠিক একইভাবে টেকনাফ থেকে কোন পণ্য মিয়ানমারে রপ্তানী করা যাচ্ছেনা।

এব্যপারে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী ওমর ফারুক (সিআইপি) জানান, গত ১৪ নভেম্বর থেকে মিয়ানমারে লাগাতার সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে বন্দর ব্যবসায়ীরা আগের মত আমদানি-রপ্তানি করতে পারছেনা। গত তিন মাস ধরে উক্ত বন্দরে আমদানি-রপ্তানীতে ধস পড়েছে।

বর্তমানে বন্দরে যে মাল গুলো আমরা আমদানি করছি। তা সম্পুর্ণ ব্যবসায়ীরা নিজেরা ঝুঁকি নিয়ে আমদানি করছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি উক্ত বন্দর থেকে প্রতিমাসে রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা বুঝে দিয়েছে, তা পুরণ করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভুমিকা পালন করতে পারি সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।

স্থলবন্দরের শ্রমিক নেতা আলী আজগর মাঝি বলেন, বন্দরে মালামাল ওঠা-নামার কাজ এক বারেই কমে গেছে। এতে বম্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিকেরা পড়েছে বিপাকে।

রাজস্বের উর্দ্ধগতি কমে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ স্থলবন্দর শুল্ক কর্মকর্তা এ,এস,এম মোশাররফ হোসেন বলেন, গত তিন মাসে গড়ে ৩৫০ কোটি টাকার অধিক রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিরসন না হলে উক্ত বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তাণী বন্ধ হয়ে যাবে। এতে প্রতিমাসে সরকার হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা যে মাল গুলো মিয়ানমার থেকে আমদানি করছে। সেই মাল গুলোও বন্দরে প্রবেশ করছে অনেক ঝুঁকি নিয়ে।